প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস
 
                             স্মরনীয় বরণীয় ব্যক্তিত্ব 
আলহাজ্ব মোঃ হাছানুজ্জামান খান
কিছু কথা
কুমিল্লা জেলার তৎকালীন লাকসাম থানার অধীন নামলকোট ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে ১৩০৭ বাংলা (১৯০০) ইং সালে সম্ভ্রান্ত পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন । তার পিতা ছিলেন মরহুম মোঃ আরিফুর রহমান এবং মাতা ছিলেন মরহুমা মোসাঃ বেগম সৈয়দেন্নেছা এবং তার স্ত্রী ছিলেন মরহুমা  বেগম জামিলা খাতুন । তাঁর পিতা আরিফুর রহমান সাহেব ছিলেন সমাজের জ্ঞানী ও গুনি ব্যক্তি, পরম ধর্মানুরাগী এবং তৎকালীন সময়ে অত্র অঞ্চলের একমাত্র চট্টগ্রাম ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা লাভ করেন । পরবর্তীতে তার পিতা  এলাকার জ্ঞান ও শিক্ষা প্রসারের জন্য ১৮৯২ ইং ৫ই এপ্রিল নিজ গ্রাম হরিপুরে প্রথমে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন । 
 শৈশবে হাছানুজ্জামান তার বাবার সান্নিধ্যে থেকে শিক্ষায় দিক্ষিত হন এবং তিনি বাবার কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে পরে স্থানীয় উচ্চ প্রাইমারী কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেন । তার পর তিনি হরিপুরের অনতিদুরে শাকতলী জুনিয়র মাদ্রাসায় ভর্তি হন এবং এরপর কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় কৃতিত্বের সহিত পাশ করেন । পরে তিনি চট্টগ্রাম সিনিয়র মাদ্রাসায় ভর্তি হন । সেন্ট্রাল পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে সবার প্রশংসার সৌভাগ্য অর্জন করেন ।শিক্ষানুরাগী হাছানুজ্জামান, খান বাহাদুর ওয়াজ উদ্দিন ( সিরাজ গঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ) সাহেবের নজরে পড়েন এবং কলেজে আই এ ক্লাসে ভর্তি হন। এ-সময় তার পিতার মৃত্যু ঘটায় লেখা – পড়ায় বাধা প্রাপ্ত হন । পরিবারের প্রথম সন্তান হিসাবে তার উপরে দায়ীত্ব বর্তিত হয় । কাজেই উপায়ন্তর না দেখে সিরাজ গঞ্জের মাননীয় স্যার আজিজুল হক সাহেবের বাড়ীতে জুনিয়র মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসাবে প্রথম কর্ম জীবনে পদার্পন করেন । স্যার আজিজুল হক সাহেবের সান্নিধ্য থেকে তার রাজনৈতিক জীবনের প্রেরণা লাভ করেন এবং হাতে খড়ি হয়। তখন হতেই হাছানের বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটতে থাকে তার জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা থেকে।  ১৯২৬ ইং সনে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে বাড়ী আসেন এবং ১৯২৭ সালে শ্রদ্ধেয় পিতার স্মরণে  নামলকোট আরাফিয়া জুনিয়র মাদ্রাসা স্থাপন করেন ।   
১৯৩৭ সালে এপ্রিল মাসে বঙ্গীয় ব্যবস্থা নির্বাচনে তিনি লাকসাম চৌদ্দগ্রাম কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হন এবং মাননীয় ফজলুল হক সাহেবের প্রতিষ্ঠিত কৃষক প্রজা পার্টিতে যোগদান করেন এবং দেশ ও দশের কাজে ব্রত হন । ১৯৩৮ সালে তিনি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য নিযুক্ত হন। বাংগালীদের মধ্যে হাছানুজ্জামান সর্বপ্রথম এই বোর্ডের সদস্য হওয়ার গৌৱৰ আর্জন করেন। ১৯30 সনে রজত জুবলী উপলক্ষে  সরকার বাহাদুর তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে খান সাহেব ' উপাধিতে ভূষিত করেন । ১৯৪১ সালের  ১৭ই জানুয়ারী তিনি তার আব্বাজানের নামে নাংগলকোট আরিফুর রহমান হাই স্কুল স্থাপন করেন এবং মাননীয় ফজলুল হকের সহযোগীতায় সেই বৎসরই মঞ্জুরী ও পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পান । 
তিনি তৎকালীন গভর্নর গোলাম ফারুকি সাহেবের আমলে ত্রান ও পূর্নবাসন মন্ত্রনালয়ে পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী ও হুইপ নিযুক্ত হন । ১৯৬৩ সনে তিনি ভূমি সংস্কার কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন। তিনি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সানসেট ল আইনের বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী বক্তৃতা পার্লামেন্টে উপস্থাপন করেন এবং প্রয়োজনবোধে নিজস্ব আসন ছেড়ে দিতে দিধা বোধ করবেন না বলে ভাষন দেন। ( এই আইন অনুসারে ৩০এ চৈত্রের মধ্যে খাজনা দিতে না পারলে জমি নিলাম হয়ে যাবে )।  তিনিই প্রথম পার্লামেন্টে ইসলামী ইউনির্ভারসিটি ( পূর্ব পাকিস্তান ) স্থাপনের কথা বলেন এবং প্রথম হতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কোরান শিক্ষার শুপারিশ করেন। হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৮ ই এপ্রিল ১৬৮ সনে  বৃহস্পতিবার ভোর ৭টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।      
পরবর্তীকালে তার যোগ্য সন্তান ডাঃ এ কে এম কামরুজ্জামান সাহেব  ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখে তার পরিবারবর্গের সকল সদস্যের এবং এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগীতায় ১৯৮৪ সালে ৯ ই ফেব্রুয়ারী নাংগলকোট হাছান মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।                                
                            
অধ্যক্ষের বাণী
 
                                কাজ চলছে
প্রতিষ্ঠাতার বাণী
 
                                 আলোকিত মানুষ গড়ার ক্ষেত্রে একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব সময় গুরুত্ব বহন করে। কুমিল্লা জেলায় প্রতিষ্ঠিত নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ এমন একটি। শৈশব জীবন ও কিশোর ছাত্র জীবনে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা  পায়ে হেটে  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার স্মৃতি আজও আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। মেধা থাকা সত্বেও  বাস্তব প্রতিকূলতারমুখে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। তাই শিক্ষিত ও মেধাবী জাতি গড়ে তুলতে কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশপাশি প্রতিষ্ঠা করি নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি এখন অনার্স কলেজে রূপ লাভ করে। দক্ষ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের তত্বাবধানে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকমন্ডলীর শিক্ষাদানে শিক্ষার্থীরা সেরা ফলাফল করছে । এটা প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা আনন্দিত হই যখন শুনি এ কলেজ কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সেরা তালিকায় রয়েছে। আমরা উচ্ছ¡সিত হই, যখন শুনি  এ কলেজের শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে সফল হচ্ছে। তখন মনে করি কলেজ প্রতিষ্ঠা বিফলে যায় নি। বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে সৃজনশীল মেধা বিকাশে এ কলেজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, এমনটাই কামনা করি সব সময়। অন্যদিকে আমার পূর্বপূরুষের নামে এ কলেজ প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে উনার স্মৃতি আজও অম্লান হয়ে আছে। আমি মনে করি, পিতা মাতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা ও সম্মান দেখানো  শিক্ষার্থীদের কর্তব্যের মধ্যে রয়েছে। আর এ কর্তব্যবোধ হৃদয়ে ধারন করতে হবে সব শিক্ষার্থীকে। সততা, ন্যয়- নীতির মধ্য দিয়ে শিক্ষিত জাতি গড়ে ওঠবে। সে দিন বেশি দুরে নয়, আমরা শতভাগ শিক্ষিত জাতি হিসেবে আত্ম-মর্যাদাশীল হবো। উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হব। কুমিল্লা জেলার  নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজের  অগ্রযাত্রা প্রশংসার দাবি রাখে। এই কলেজের নামে সমৃদ্ধ ওয়েবসাইটে সংরক্ষিত সকল তথ্য উপাত্ত শিক্ষার্থীদের পাশপাশি বিশ্ব পরিসরে স্থান পাবে এটাও কামনা করছি।  
ডাঃ এ কে এম কামারুজ্জামান
প্রতিষ্ঠাতা
নাঙ্গলকোট হাছান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজ । 
নাঙ্গলকোট,কুমিল্লা।                                    
                                
 
        
       
               
               
               
               
                                     
                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                            